~দাঁড়া, এতো নতুন বাসা। পাখি বাসা চিনুক। আগে তার নতুন বাসা ভালো লাগুক।
~খাঁচা?
স্যার হাসছেন।
হাঁফাতে হাঁফাতে বাড়ি। তারপর স্কুল-এ দৌড়তে হবে। মা ভাত মাখছে।
~মা, বাবা বাজার করেনি আজ?
~বাবা তো কোন ভোরে বেড়িয়ে গেছে। বাজার কখন করবে? তোকে স্কুলে দিয়ে আমি মাংস কিনে আনব। তুই ডিম ভাজা দিয়ে খেয়েনে। বাড়ি এসে মাংস দিয়ে অল্প করে হলেও ভাত খাবি। অশান্তি করবিনা তখন।
~ বাবাই?
~হম, বলো।
~ নিজের ঘরটা গোছাবি আজ। কী করেছিস দেখ খাটটা! এটা কি কোনও ঘর?
~না তো, এটা ব---সওওও---তি....
মা হাসছে।
ঘণ্টা তলা। ছোট সন্ন্যাসী(কাকু) দাঁড়িয়ে। পাশে সব ম্যাডাম চলে এসেছেন। তিনজন দৌড়াচ্ছে। সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নামতে নামতে...
~খেলাটা শেষ হলো না তো, শরণ্যা?
~টিফিনে খেলবি তো, কথা?
~তোর আর ভেঙে যাওয়া খেলা মাঝপথে শুরু করতে ইচ্ছে করবে? অরণী? নতুন করে শুরু করলে ভালো হয়না?
~সে কোনও অসুবিধা নেই। তোরা থাকলেই হল। বল, তোরা খেলবি? কীরে বল? চুপ করে গেলি কেন? কথা? কী হলো?
.
.
.
.
~না, মানে বলছিলাম, স্যার, "ছেঁড়া তার" মন্বন্তর, কালোবাজারি, অর্থনৈতিক ধ্বংসাবশেষ থেকে একটা ছোট্ট সংসার ভাঙার মধ্যে দিয়ে সামাজিক অবক্ষয়, মানবিক বিপর্যয় এর কথা বলল।
~হ্যাঁ, তোর প্রশ্নটা কী?
~সংসার ভাঙার দায় সমাজ নেয়না কেন? সংসার কাকে বলে?
স্যার আজ হাসলেন না তো?
.
.
.
.
~কীরে চল, খেলবি বললি যে, যাবিনা?
~চল, চল। শরণ্যা কই গেল? ওই শরণ্যা, শরণ্যা...
~শরণ্যা পড়ে গেছে। , শিগগিরই চল নীচে।
~তুই পড়লি কী করে? লেগেছে না রে খুব? এতো রক্ত বেরোচ্ছে।
~আমি বসে দেখি। তোরা খেল।
~দুজনে কি তাই তাই তাই, মামাবাড়ি যাই খেলব?
~ইন্দ্রাণী, তিস্তা, আর্যা খেলবে। ওদের বল একবার।
~তুই তো খেলতে পারবি না। অরণী, আজ বরং থাক, বল?
~থাক।
~কেন ? থাকবে কেন? তোরা খেল না.... খেলার লোক আছে তো... সেই তো বলবি পরে, আমার জন্য খেলা মাটি হয়েছে।
~অরণী, বুঝলি তো এইজন্য ছেঁড়া তার ছেঁড়াই থাকবে।
অরণী হেসে ফেলে। যার হাসিতে আমাদের ছোটবেলা খুব বড় হয়ে গেল একদিন। আমি ছুঁতে গিয়ে দেখলাম....
~কি বললি, আমার মাথার তার কাটা?
~এই জন্য সেদিন বলেছিলাম ছেঁড়া তার ছেঁড়াই থাকল।
~সেদিন মনে হচ্ছে তোর? তিন বছর কেটে গেছে।
~তার তবু জুড়ল না।
~মানে?
~তোর মনে পড়ে শরণ্যা, সেইদিন-এর পর আমাদের আর খেলা হয়নি।
~অরণী, তোর মনে আছে? তুই বলেছিলি, আমরা থাকলেই হবে। আবার নতুন করে খেলা শুরু করলেই হল। কিন্তু, কেন আর খেললাম না রে? আমরা তো সবাই ছিলাম?
.
.
.
.
~সবাই থাকে সংসারে। শুধু চরিত্রগুলোর মাঝখানে দূরত্ব, ব্যাবধান বুঝতে গেলে অনেকটা সময় পেরোতে হয়। একটা চরিত্র থেকে আরেক চরিত্রের দিকে যেতে যেতে দেখবি, একটা স্রোত এসে তোকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। কখনও সেই স্রোতে ভেসে দেখবি তুই বুঝতে পারিসনি, তুই ভেসে গেছিস। আবার কখনও কখনও তোর মনে হবে তুই নিশ্চিত ডুবে যাবি এইবার।
অন্তরে জাগিছ অন্তর্যামী ।
তবু সদা দূরে ভ্রমিতেছি আমি ।।
সংসারসুখ করেছি বরণ,
তবু তুমি মম জীবনস্বামী ।।
~আপনি তো বললেন। কিন্তু স্যার, সত্যিই কি পৌঁছনো গেল শেষ অবধি? না গেলে যে ছেঁড়া তার জুড়বে না কখনো! যখন পৌঁছবে তখন মানুষগুলোও সময়ের সাথে হারিয়ে যাবে না তো? সময় কি অপেক্ষা শেখায়? স্যার, ছেঁড়া তার জুড়বে তো ঠিক? শেষ পর্যন্ত Change is the only constant এগিয়ে গেল?
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে
দেখা দেয় অবশেষে...
...চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।
Comments
Post a Comment