Skip to main content

Featured

যে চোখ দিয়ে আমি মানুষ চিনলাম, যে কান দিয়ে আমি শুনলাম ভালোবাসি, যে হৃদয় দিলাম শতদল করে, সবশেষে যে শরীর আমি চিনেছি ঈশ্বররূপে, তার প্রতিটি স্তর মিথ্যে, আবেশ মিথ্যে। এমন ঘৃণ্য অভিজ্ঞতা অতি বড় শত্রুরও যেন না হয়। 

"যা কিছু মোর ছড়িয়ে আছে"

~ত্যি বলতে ভীষণ সাংসারিক টাইপের সিনেমাটা, সংসার : ভালো না খারাপ? দেখ, এসব আমি বলছি না যে সংসার করা খারাপ, না না ভালোই, হ্যাঁ ভালোই তো, কিন্তু কী বলতো সিনেমাটা আমার পছন্দ হয়নি...

গতকাল এক বন্ধুর সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ সংসার প্রসঙ্গ উঠে আসে। আমি বুঝতে পারি হঠাৎ বলে ওঠা "সাংসারিক টাইপের" কথাটা কীভাবে আমি নেবো তা আমার বন্ধু বুঝে উঠতে পারেনি। সে চেনে আট বছর আগের এক মেয়েকে, যাকে, "জানিস তো আজ পড়তে গিয়ে একটা ছেলে...", এটুকু বলাতে কেঁদে কেটে স্কুল মাথায় তুলেছিল।  সেজন্য অনায়াসে আমার সামনে বন্ধু বলে ফেলে, "সাংসারিক টাইপের...."। তারপর তার খেয়াল হয়, আট বছর পেরিয়ে গেছে মাঝে। আট বছরে সে কি জয়শ্রী ম্যাডাম এর তাৎক্ষণিক লেখা ক্লাসে "সংসার" বিষয়ে যে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপৃত সংজ্ঞা দিয়েছিল তাকে ছোট করতে পেরেছে? এই আশঙ্কায় পরের কথাগুলো সে বলেছে।

~তুই আমায় অন্ততঃ বলিস না সংসার ভালো না খারাপ। চারিদিকে নানা প্রজাতির সংসার, আর নানা উপপ্রজাতির প্রেম এর মাঝে নিজেকে কীরকম যেন সন্ত্রাসবাদী বলে মনে হয় আমার।
আশ্বস্ত করি তাকে।

মাঝে ছ ছ'টা বছর খুব কম সময় নয়।
আলো না দেখা ভোর। কুয়াশায় ভিজতে থাকা তপনবাবুর বাড়ি, বাড়ির উঠোন, সাইকেল এর ভিড় ঠেলে নতুন পড়া, পড়ার ধরণ, ঘর, ঘরের গন্ধ, নতুন মানুষ, তাদের দৃষ্টি পেরিয়ে পড়া শেষ হওয়ার আনন্দ। 
~স্যার, আমায় খাতা দেবেন না?
~দাঁড়া, এতো নতুন বাসা। পাখি বাসা চিনুক। আগে তার নতুন বাসা ভালো লাগুক।
~খাঁচা?
স্যার হাসছেন।

হাঁফাতে হাঁফাতে বাড়ি। তারপর স্কুল-এ দৌড়তে হবে। মা ভাত মাখছে।
~মা, বাবা বাজার করেনি আজ?
~বাবা তো কোন ভোরে বেড়িয়ে গেছে। বাজার কখন করবে? তোকে স্কুলে দিয়ে আমি মাংস কিনে আনব। তুই ডিম ভাজা দিয়ে খেয়েনে। বাড়ি এসে মাংস দিয়ে অল্প করে হলেও ভাত খাবি। অশান্তি করবিনা তখন।
~ বাবাই?
~হম, বলো।
~ নিজের ঘরটা গোছাবি আজ। কী করেছিস দেখ খাটটা! এটা কি কোনও ঘর?
~না তো, এটা ব---সওওও---তি....
মা হাসছে।

ঘণ্টা তলা। ছোট সন্ন্যাসী(কাকু) দাঁড়িয়ে। পাশে সব ম্যাডাম চলে এসেছেন। তিনজন দৌড়াচ্ছে। সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নামতে নামতে...
~খেলাটা শেষ হলো না তো, শরণ‍্যা?
~টিফিনে খেলবি তো, কথা?
~তোর আর ভেঙে যাওয়া খেলা মাঝপথে শুরু করতে ইচ্ছে করবে? অরণী? নতুন করে শুরু করলে ভালো হয়না?
~সে কোনও অসুবিধা নেই। তোরা থাকলেই হল। বল, তোরা খেলবি? কীরে বল? চুপ করে গেলি কেন? কথা? কী হলো?
.
.
.
.
~না, মানে বলছিলাম, স্যার, "ছেঁড়া তার" মন্বন্তর, কালোবাজারি, অর্থনৈতিক ধ্বংসাবশেষ থেকে একটা ছোট্ট সংসার ভাঙার মধ্যে দিয়ে সামাজিক অবক্ষয়, মানবিক বিপর্যয় এর কথা বলল।
~হ্যাঁ, তোর প্রশ্নটা কী?
~সংসার ভাঙার দায় সমাজ নেয়না কেন? সংসার কাকে বলে?
স্যার আজ হাসলেন না তো?
.
.
.
.
~কীরে চল, খেলবি বললি যে, যাবিনা?
~চল, চল। শরণ‍্যা কই গেল? ওই শরণ‍্যা, শরণ‍্যা...
~শরণ‍্যা পড়ে গেছে। , শিগগিরই চল নীচে।
~তুই পড়লি কী করে? লেগেছে না রে খুব? এতো রক্ত বেরোচ্ছে।
~আমি বসে দেখি। তোরা খেল।
~দুজনে কি তাই তাই তাই, মামাবাড়ি যাই খেলব?
~ইন্দ্রাণী, তিস্তা, আর্যা খেলবে। ওদের বল একবার।
~তুই তো খেলতে পারবি না। অরণী, আজ বরং থাক,  বল?
~থাক।
~কেন ? থাকবে কেন? তোরা খেল না.... খেলার লোক আছে তো... সেই তো বলবি পরে, আমার জন্য খেলা মাটি হয়েছে।
~অরণী, বুঝলি তো এইজন্য ছেঁড়া তার ছেঁড়াই থাকবে।
অরণী হেসে ফেলে। যার হাসিতে আমাদের ছোটবেলা খুব বড় হয়ে গেল একদিন। আমি ছুঁতে গিয়ে দেখলাম....

~কি বললি, আমার মাথার তার কাটা?
~এই জন্য সেদিন বলেছিলাম ছেঁড়া তার ছেঁড়াই থাকল।
~সেদিন মনে হচ্ছে তোর? তিন বছর কেটে গেছে।
~তার তবু জুড়ল না।
~মানে?
~তোর মনে পড়ে শরণ‍্যা, সেইদিন-এর পর আমাদের আর খেলা হয়নি।
~অরণী, তোর মনে আছে? তুই বলেছিলি, আমরা থাকলেই হবে। আবার নতুন করে খেলা শুরু করলেই হল। কিন্তু, কেন আর খেললাম না রে? আমরা তো সবাই ছিলাম?
.
.
.
.
~সবাই থাকে সংসারে। শুধু চরিত্রগুলোর মাঝখানে দূরত্ব, ব্যাবধান বুঝতে গেলে অনেকটা সময় পেরোতে হয়। একটা চরিত্র থেকে আরেক চরিত্রের দিকে যেতে যেতে দেখবি, একটা স্রোত এসে তোকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। কখনও সেই স্রোতে ভেসে দেখবি তুই বুঝতে পারিসনি, তুই ভেসে গেছিস। আবার কখনও কখনও তোর মনে হবে তুই নিশ্চিত ডুবে যাবি এইবার। 
অন্তরে জাগিছ অন্তর্যামী ।
তবু সদা দূরে ভ্রমিতেছি আমি ।।
সংসারসুখ করেছি বরণ,
তবু তুমি মম জীবনস্বামী ।।

~আপনি তো বললেন। কিন্তু স্যার, সত্যিই কি পৌঁছনো গেল শেষ অবধি? না গেলে যে ছেঁড়া তার জুড়বে না কখনো! যখন পৌঁছবে তখন মানুষগুলোও সময়ের সাথে হারিয়ে যাবে না তো? সময় কি  অপেক্ষা শেখায়? স্যার, ছেঁড়া তার জুড়বে তো ঠিক? শেষ পর্যন্ত Change is the only constant এগিয়ে গেল? 
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে
দেখা দেয় অবশেষে...
...চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।
আর Fundamental? 
Without having any internal structure three quarks give rise to creation of a proton. Doesn't their existential dependence define the fundamentality on the basis of mereological entity? সব মিথ্যে হয়ে যায়? 
.
.
.
.
~আমরা ছিলাম না, কথা। ছিলাম না আমরা। আমাদের মাঝখানে সময় ফুরিয়ে এসেছিল।
~কিন্তু, শরণ‍্যা .....
.
.
.
.
~স্যার?
~বল
~আপনি যে বললেন, সময় মানুষের মধ্যে দূরত্ব নির্ধারণ করে। আবার সেই সময়ই মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে। কিন্তু এমন যদি হয় দূরত্ব স্থির হল সময়ের অনুপস্থিতি দিয়ে? তাহলে? কে নিয়ে যাবে মানুষের কাছে?
~ তখন দেখবি সবাই আছে। শুধু সংসারটা থাকবে না।
~কোথায় তবে সময় ফুরিয়ে আসে? কোথায় সময় বেঁচে যায় আঘাত-প্রত্যাঘাতেও?
আর ছেঁড়া তার?

সংসার গহনে
নির্ভয়
নির্ভর,
নির্জন
সজনে
সঙ্গে রহো
চিরসখা, ছেড়ো না মোরে ছেড়ো না ।।

Comments