Featured
- Get link
- X
- Other Apps
সুখ পাখি
"মন খারাপ হলে কুয়াশা হয় ব্যাকুল হলে তিস্তা।"
শুধু তিস্তা নয়, মন খারাপ ঝলমল করে ওঠা রোদ, মন খারাপ আশমানি রঙ মাখা ইউক্যালিপটাস বন, খামখেয়ালি বৃষ্টিতে ভিজে চুপ্পুর শিউলি। শেষ ফুল দিয়ে দেউলিয়া আজ। বড় হয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় বিপদ। যা কিছু সহজ, যা কিছু সরল তাকে হাত ধরে নিয়ে যেতে হয় কানাগলি, রাজপথ দিয়ে। পথ প্রদর্শক তাই গান্ধারী। সত্যস্থবিররত পুণ্যের ঝুলি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে পথে ঘাটে। চোখ থেকে কাপড় সরে গেলে দেখা যেত ক্যাসেটের টেপ সারা গায়ে জড়িয়ে ছোট ছোট স্পঞ্জের টুকরো তুলে নিয়ে কে যেন বসে চিবোচ্ছে। মায়ের চুড়ির শব্দ শুনে দে ছুট। তারপর পা জড়িয়ে গেল কত ফাঁসে। সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়তে পড়তে একটা চৌকো বাক্স, কতওও বড়। এখানেই তবে পৌঁছানোর কথা ছিল বোধ হয়। আর সেই সহজ সরল সত্যি মিথ্যে কান্না হাসি সব দপ করে জ্বলে উঠে ঝাড়বাতি হয়ে যায়। এত আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে আসে। সবুজ হয়ে জ্বলে ওঠা আলো ছাতিমের গন্ধ ক্রমাগত গাঢ় হয়ে ওঠে। মাতাল করা গন্ধ নিতে নিতে নাকের খুব কাছে নিয়ে আসতে দিয়া বলবে, অতো কাছ থেকে গন্ধ নিতে নেই। কাছ থেকে সবুজ আলো তীব্রতর হয়ে ওঠে। অবাধ্য। তাই সাপের ভয় দেখাতে হয় তাকে। "জানো, এই গন্ধে সাপ আসে। তুমি ফুলগুলো মাকে দিয়ে দাও, সোনা।" মা হাত পাতে। ওদিকে ততক্ষণে সব ফুল উড়ে গেল পায়ের কাছে। কোঁকড়া চুলের অসুর, আর তার গলায় জড়ানো সাপের গায়ে ফুল ছিটিয়ে পড়তেই এক ঝাঁক ঝিঁঝিঁ পোকা যেন হৈ চৈ করে উঠল।(মহম্মদ বিন তুঘলক তামার মুদ্রা প্রচলন করলেও তোষামোদকারীদের থেকে এত হাততালি পেয়েছিলেন কিনা সন্দেহ হয়)। পাশে দাঁড়ানো মায়ের চোখ অবশ্য ততক্ষণে জাহানকোষা। অতএব, দে ছুট। ছুটতে ছুটতে বড় ঘর চলে আসে, দাদুর পেন্ডুলাম ঘড়ির কাঁটায় পা বেঁধে মুখ থুবড়ে পড়ে। ছাতিমের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে সারা ঘর জুড়ে, একটু একটু করে। সবুজ আলো চোখের ভিতর দিয়ে ঢুকে পড়ে, কানাগলি থেকে রাজপথ। দিয়া গল্প শোনায়। মেডুসা। ছোটবেলা গুটিসুটি হয়ে ঢুকে পড়ে পাথরের গুহায়। তাকে কেউ খোঁজে ইচ্ছামতীর ধারে, জোড়া শিব মন্দিরের পিছনে আম গাছ তলায়, কিম্বা হয়তো ঠাকুরদালানের আল্পনায়। মৃদু সুর শোনা যায়, আকাশি রঙ একটু একটু করে গোলাপী আভায় ছড়িয়ে পড়ে সবটুকু জুড়ে, তবু ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে এক স্পর্শকাতর দিন। নিরন্তর যাপন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর অপেক্ষা হয়ে ওঠে। অন্ধ বিষাদ তাই শেষ পারানির কড়ি। মোহনায় এসে মেশে সেই সহজ সরল গতিপথ।
"জড়ায়ে আছে বাধা, ছাড়ায়ে যেতে চাই,
ছাড়াতে গেলে ব্যথা বাজে।"
সপ্তপর্ণীর শুকনো পাতা খসে পরে, একটু একটু করে ডুব দেয়। তলহীন। মাত্রাহীন। একটামাত্র পাতার নিঃশব্দ বিসর্জনে শান্ত জলস্তর কেঁপে ওঠে।
- Get link
- X
- Other Apps
Popular Posts
আমার কষ্টগুলো ডালিমের মতো, লালের জমাট কেউ ভাঙতে পারে না
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment