যে চিঠি পৌঁছবে না কোনওদিন, কোনও ঠিকানায়।
এরপর একদিন আয়ুহীন পরিমাপে দূরত্ব বাড়িয়ে নেয় অবুঝ হৃদয়। নাছোড়বান্দা ভরসা আস্তে আস্তে লুকিয়ে পরে ওই পাহাড়ি ঝর্ণার নীচে, লোকগাথায়। মানুষের মতো মানুষ। প্রথম দুই মানুষের মধ্যে আলোকবর্ষ ফারাক। একটা নিস্তরঙ্গ জীবনের মধ্যে হঠাৎ সেদিন কতগুলো পাতা ঝরেছিল একটা, দুটো করে। তাতে প্রত্যেক স্তর কেঁপে ওঠে ভয়ে, ওরা লুকিয়ে পড়তে পারলে বাঁচে। ম্লান আলো ভরসা।
অথচ মহাসমারোহে আসা প্রেম থেকে বন্ধুত্বের মাঝে এই মরতে বসা আলো বড় বেমানান। একদিকে আশ্রয় খোঁজা ভীতু জীবন, অন্যদিকে চিলেকোঠার জাফরীতে চোখ রাখা ভোর। এসবের মাঝে শুধু তুমি নেই। কোনওদিন ছিলেনা।
মোহন বাঁশি সুরে এ জীবনে জোয়ার আসে। সে বোঝায় মুহূর্ত, বোঝায় উদযাপন। অবাধ্য জটিল ধাঁধায় জড়িয়ে পড়া সপ্তদশীকে বোঝায় আবেগের স্তর। এক মাত্রা থেকে অন্য মাত্রায় উত্তরণের আগেই মুখ থুবড়ে পড়ে সাঁঝবাতি। একটু একটু করে গাঢ় হয়ে আসা অন্ধকারে ভালোবাসা মৃদু পায়ে আসে। নানা রূপ নানা বর্ণ পেরিয়ে একক অনুভূতি হয়ে সে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ইউক্যালিপটাসের বন, কাকভিজে হয়ে বাঁক নেওয়া পাহাড়ি রাস্তায়, অর্কিডের নীলে, তিস্তার স্রোতে। সংকীর্ণ একমাত্রায় চার অক্ষর ধরে না। সে ছড়িয়ে পড়ে তার বহু অস্তিত্বের অধিকার নিয়ে। পুরোনো অঙ্কের পাতা আমাদের কাগজের নৌকা। ভেসে যায় ভুল হিসেবের জলে। অগোচরে যতসম্ভব তত ত্রুটি ক্ষমাহীন হয়। অপ্রতিরোধ্য।
সংশোধনে দুই মানুষের স্থান বদল হয়, অপরিবর্তিত দূরত্ব অসুখের মত। ছড়িয়ে পড়ে অস্থি-মজ্জায়, শিরায়-উপশিরায়।
মৃতদেহের সাথে দূরত্বও কি পোড়ে? পুড়ে যায় অবুঝ হৃদয়? কিম্বা দুর্বোধ্য চতুর্মাত্রিক অনুভূতি?
প্রবণতা থেকে অভিঘাত একে একে জ্বলে ওঠে আরাত্রিক হয়ে। আমারা আবার তাকে সাঁঝবাতি বলে ডাকি।
Comments
Post a Comment