Skip to main content

Featured

টুকরো কথা - ২৯

এভাবেই শেষ হওয়ার ছিল হয়তো। কত চিৎকার কত চোখের জলকে চুপ করিয়ে দিয়ে চলে যেতে হত বহুদূর। ক্ষমা করতে হত, সত্যি ক্ষমা করতে হত শত অন্যায়। অথচ ক্ষমা করতে পারলে চলে যেতে হত না সব কিছু অক্ষত ফেলে। দিনের শেষে বুঝলাম ক্ষমা অত্যন্ত দ্বিপাক্ষিক। আমরা একচেটিয়া ক্ষমা করি বা করি না। আমাদের গলা টিপে মেরে ফেলতে হয় নিজের না বলা কথা। কান্না গিলতে গিলতে গলা ব্যথা হয়ে যায়। ক্ষমাহীন হয়ে থেকে যেতে নেই। অনেক দেরী হয়ে গেল বুঝতে। তার মধ্যে কালশিটে থেকে না খেয়ে বমি, রাতের পর রাত জেগে থেকে ভাবা কী করলে সহজে কম কষ্টে আরেকটু কম কষ্টে মরতে পারব কোনও কিছুই বাদ দেইনি। কারণ আমি মরেছি অনেকবার। অনেক কাটা দাগ নিয়ে আবার উঠেছি ঘুম থেকে। ভুলতে পারব না অনেক কিছুই কিন্তু আমায় শিখতে হবে ক্ষমা করে আরও দূরে চলে যেতে, এতটাই দূরে যেখান থেকে নিজেকে দেখা যায়না।

ডায়েরী - ০১

আজ আবার ভাট বকার পালা। আজ ক্লিনিকাল ডিপ্রেশান আর পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার এর রিপোর্ট এসেছে। দুক্ষেত্রেই ডাক্তারদের মতে আমি ইন্টারমিডিয়েট স্টেজে আছি। যে ওষুধগুলো চলছিল সেগুলো বন্ধ করার আজ তৃতীয় দিন। না, আমি ভালো নেই। আমার জীবনে বেশকিছু ঘটনা আমায় এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে। ভেবেছিলাম সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুদিন আগে আবার কিছু সমস্যা হয়। আমি ভালো নেই এই কথাটা আমায় 988 এ প্রায়ই ফোন করে বলতে হয়। আমি আর পারছিনা। আমি এর চেয়ে বেশীকিছু বলতে পারিনা। ওরা বলে বাড়ির লোকের সাথে কথা বলতে। কিন্তু, কাকে বলবো? মা নিজেই হাজার সমস্যায় জেরবার, ভাই ছোট, বাবারও বয়েস হচ্ছে। আর আমার বন্ধু বলতে একজন আছে। সে জিজ্ঞেস করে, কী হয়েছে। বলতে পারিনা। তখন খুব অসন্তুষ্ট হয়। আমি রুক্ষ ব্যবহার করে ফেলি। তার সামনে কাঁদলে সে বিরক্ত হয়ে ফোন কেটে দেয়। বা যদি বলিও কষ্ট হচ্ছে তখন আরও বেশী করে খারাপ ব্যবহার করে। নয়তো বলে পরে ফোন করবে। এখন তার ঝামেলা করতে বা আমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছেনা। সে নিজেও খারাপ পরিস্থিতির শিকার। হঠাৎ হঠাৎই দুর্ব্যবহার করে, বলে চুপ করে যেতে, বা ফোন কেটে দিয়ে পরে সুবিধামতো ফোন করে। এরমধ্যে আমি কেমন আছি? না জানতে চায়না। কাঁদলে খারাপ ব্যবহার দ্বিগুণ হয়। এর মধ্যে আমি বেঁচে থাকি। একা লাগে। বাড়ি ফেরা হবেনা কখনও ভাবলে কষ্ট হয়। ডাক্তারকে এসব বললে উনি বলেন বন্ধুদের সাথে ভাগ করে নিতে হবে সব কথা। এসময় কেউ পাশে থাকলে খুব ভালো হয়। কিন্তু কেউ থাকে না। ভালো সময়ে যদিও সবাই থাকে, কিন্তু খারাপ সময়ে নয়। অবশ্য সব এরকম ছিলনা সম্পর্কের প্রথম দিকে। তখন অনেক যত্ন ছিল, আগলে রাখার তাগিদ ছিল। এখন হয়েছে কী, আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে লোকের হাতে পায়ে ধরে বলা আমার কষ্ট হচ্ছে।

মাঝেমাঝে ভাবি, জীবনে এমন কিছু কী থাকবেনা যাকে আমি আঁকড়ে ধরে কাটিয়ে দিতে পারব এক জীবন? যে আমার কষ্ট, না পাওয়া ভাগ করে নেবে? যে আমায় বলবে তুই থাক, তুই যেমন তেমন করে থাক আমার কাছে। আমরা একসাথে হৈহৈ করে পার করে দেব সব না পাওয়া। তুই শুধু আমার কাছে থাক? আমরা একসাথে বাঁচব। একসাথে মরব? রোজকারের জীবন আমরা কাটিয়ে দেব একসাথে?  ছোটবেলায় কত গল্পের বইয়ের চরিত্র মনে দাগ কেটে যেত এখন তাদের কথা মনে পড়ে। ভাবি কাটিয়ে দেব এজীবন ঝগড়া করে? অভিমানে। ভালোবেসে।
যাইহোক, ডাক্তার লিখতে বলেছেন। সব কথা। লিখলে নাকি হালকা লাগে। আমার লাগছে না। খুব একা লাগে মানসিকভাবে। আমি জানিনা কতদিন এরকমভাবে চলবে। আমি বাঁচতে চাইনা আর। আর মরার সাহস নেই।
আমি খুব ক্লান্ত। আজ এটুকুই। আর আমার পাওনা? আমার লক্ষ্মী ভাইয়ের হাসি মুখ আর সবচেয়ে কাছের বন্ধুর ভীষণ চেষ্টা পাশে থাকার আর শেষে অকারণে অপমান।
আবার কাল উঠবো। লিখবো নতুন যন্ত্রণার গল্প।
একদিন এইভাবে লিখতে লিখতে আমার ছুটি হয়ে যায় যেন।

Comments

  1. একি অবস্থা তোর!!!!!

    ReplyDelete

Post a Comment